ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেন লিখছে না গণমাধ্যম প্রশ্ন মির্জা আব্বাসের

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে‘ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট’এর বিরুদ্ধে কেনো গণমাধ্যম লিখছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মির্জা আব্বাস।

মঙ্গলবার(১১ মার্চ) বিকালে গুলশানের হোটেল লেক শোরে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠনের উদ্যোগে গণমাধ্যম ও মিডিয়ার সাংবাদিকদের সন্মানে আয়োজিত এক ইফতার পার্টিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই প্রশ্ন তুলেন।

তিনি বলেন, ‘একটি বিশেষ দল সম্পর্কে আপনারা কোনো সাংবাদিক কোনো কিছুই লিখছেন না, পর্দা অন্তরালে আরও অনেক কিছু আছে, ঘটছে আপনারা কিন্তু লিখছেন না। শুধ লিখছেন বিএনপি সম্পর্কে ফুলিয়ে ফাপিয়ে বাড়িয়ে লিখছেন।আপনারা লিখছেন না কোন কোন ব্যবসায়ীর হেলিকাপপ্টারে কে বেড়াতে যায়, কোন ব্যবসায়ী কাকে কত টাকা দেয়, কোন ব্যবসায়ীকে আজকে আমাদের অনেক রাজনৈতিক দল পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে… যাদের নামে হত্যা মামলা থাকার পরও একটি দুইটি নয়.. এই ঘটনার পরেও অনেক ঘটনা রয়ে গেছে। জুলাই=আগস্ট ছাড়াও হত্যা ঘটনায় জড়িত এমন ব্যবসায়ী মহল জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে আপনারা কিছু লিখছেন না।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমি আপনাদের(সাংবাদিকদের) সমালোচনা করছি না। আমি আপনাদের আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই যে, আপনারা কোথায় কোখায় ভুল করছেন। এতে দেশের ক্ষতি হচ্ছে, জাতির ক্ষতি হচ্ছে। আপনারা(গণমাধ্যম) কেনো তুলে ধরছেন না যারা জুলাইয়ের প্রথম দিকে ব্যবসায়ীদের সম্মেলনে সেখানে কারা কারা ছিলো, কারা কারা গ্রেফতার হয়েছে, কারা কারা হয় নাই, কেনো হয় নাই এটা কিন্তু আপনাদের তুলে ধরা দরকার।’

তিনি বলেন, ‘এসমস্ত লোকগুলো গত ১৭ বছর টাকা কামিয়েছে আর আগামী ১৭ বছর এই টাকা খরচা করবে বাংলাদেশ ধবংস করার পেছনে। সুতরাং আপনারা দয়া করে ওই সমস্ত ব্যক্তিদের একটু তুলে ধরেন…সাবধান করেন। ওরা মনে করে টাকা হলে বোধহয় পৃথিবীটা পকেটে নেয়া যায়। কিন্তু ওরা জানে না টাকা হলে সব সাংবাদিকদের কেনা যায় না। এটা আমার জীবনে দেখা ব্যাপার… টাকা হলে সকল সাংবাদিককে কেনা যায় না।’

ফ্যাসিস্ট সরকারের মদদপুষ্ট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন তার কারণও তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে আামি বললাম আমি তাদের বিরুদ্ধে বলি নাই। আমি আমার পক্ষে বলেছি। কারণ আমি বাঁচতে চাই, আমাকে বাঁচতে হবে। আর ওই লোকগুলো যদি অবৈধ টাকা নিয়ে এভাবে ঘুরে বেড়ায় তাহলে বাংলাদেশের কোনো মানুষ সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে পারবে না। এদেশটাকে তারা অসুস্থ করে তুলবে, এদেশের মানুষকে তারা অসুস্থ করে ফেলবে, এদেশের গণতন্ত্রকে তারা অসুস্থ করে ফেলবে।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘শুধু অবৈধ টাকা লুটকারী ব্যবসায়ী না, সচিবালয়ে খোঁজ নেন আওয়ামী দোসরা কিভাবে সেখানে সবকিছু নিয়ে বসে আছে… আওয়ামী দোসরা সচিবালয়ে, থানা, ইউনিয়ন পরিষদ সমস্ত জায়গায় তারা অবস্থান নিয়েছে। সুতরাং সাংবাদিকদের উচিত হবে দেশ ও জাতিকে বাঁচানো জন্য ওদের অবস্থানের খবর সংগ্রহ করে মানুষের সামনে তুলে ধরা।’

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ-পরিক্রমায় সাংবাদিকদের ভূমিকার প্রশংসা করেন বিএনপির এই নেতা।

তিনি বলেন, ‘ আওয়ামী লীগের দোসররা আজকে কে কোথায় অবস্থান করছে এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোন কোন রাজনৈতিক দলের কার কি অবস্থান, কোথায় অবস্থান এটা আপনাদের পরিস্কার ভাবে তুলে ধরতে হবে।’

‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ও সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনির সঞ্চালনায় ইফতারপূর্ব এই আলোচনায় বিএনপির স্থাযী কমিটির সদস্য আবদুল ম্ঈন খান ও সেলিমা রহমানও বক্তব্য রাখেন।

ইফতারে দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, সম্পাদক মাহবুবা চৌধুরী, বিএনপির শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, রশিদুজ্জামান মিল্লাত, মওদদু হোসেন আলমগীর পাভেল, শাম্মী আখতার, আশরাফ উদ্দিন বকুল, আবুল কাশেম, মোস্তফা ই জামান সেলিম, বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার, আমরা বিএনপি পরিবারের সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুন উপস্থিত ছিলেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button