নজরদারীতে সাংবাদিক জেমসন মাহবুব

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর অবৈধভাবে ভারত যাওয়ার পথে একাত্তর টেলিভিশনের সিইও মোজাম্মেল বাবু, দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্তসহ চারজনকে আটক করেছেন স্থানীয় জনতা। এর মধ্যে অণ্যতম ছিলেন একাত্তর টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার মাহবুবুর রহমান (জেমসন মাহবুব) ও প্রাইভেটকার চালক। ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা হয়ে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার পথে তাদের আটক করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হত্যা, গণহত্যা ও নির্যাতনে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে তারাসহ মোট ৫৩ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করা হয়। এর মধ্যে ৩০ জন সাংবাদিক। আন্দোলনে নিহত রিয়ানের বাবা আব্দুর রাজ্জাক গত ২৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় এ অভিযোগ দাখিল করেন।

অবাক করা বিষয় হচ্ছে তিন কোটি টাকার বিনিময়ে একাত্তর টিভির সিনিয়র রিপোর্টার মাহাবুবুর রহমান (জেমসন মাহবুব) মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্তকে সীমান্ত পার করে দেবার চুক্তি করে পরে স্থানীয় জনতার হাতে আটকের পর পুলিশ তাদের গ্রেফতার করলেও পরবর্তীতে একাত্তর টিভির সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান ডিবি পুলিশের সাথে টাকার বিনিময়ে মামলা থেকে অব্যাহতি নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই টাকা দিয়ে স্ত্রীর নামে রাজধানীতে ফ্লাটসহ সম্পদেনর পাহাড় গড়েছেন জেমসন মাহবুব।

তবে এখন নড়েচড়ে বসেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত বা সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে এখন থেকে তদন্তকারী কর্মকর্তারা নিজ উদ্যোগে গ্রেপ্তার করতে পারবেন। এ সংক্রান্ত ক্ষমতা যুক্ত করে ২০১০ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কার্যপ্রণালী বিধিমালায় বড় ধরনের সংশোধন আনা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সংশোধিত বিধিমালার প্রজ্ঞাপন জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার, সদস্য এম মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী ও মো. শফিউল আলম মাহমুদের আদেশে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এ এস এম রুহুল ইমরান প্রজ্ঞাপনটি জারি করেন।

গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। তারপর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের তিনটি সংশোধন আনা হয়। আর ট্রাইব্যুনালের কার্যবিধির সংশোধন আনার এটিই প্রথম উদ্যোগ।

আগে ট্রাইব্যুনালের কার্যবিধি অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনাল কারও বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাস্তবায়ন করতে পারেন। সংশোধন করে পরোয়ানা কার্যকরের ক্ষমতা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তাদের দেয়া হলো।

গনহত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে এবং তাদের সহযোগীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে বলেও জানায় ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তারা। তারা জানায় আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রত্যেকটি শাখা থেকে পুরোনো নথি তলব করা হচ্ছে যাতে জুলাই গনহত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের এবং তাদের সহযোগীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা যায়। সেই দিকে থেকে অপরাধী সহযোগী হিসেবে সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান জেমসন মাহবুব) এর বাইরে নয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button